Thursday, October 17, 2019


খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য পরিবেশের জন্য হুমকি গোল্ডেন রাইস চাষাবাদের
অনুমতি না দেওয়ার দাবি জানিয়েছে কৃষি শ্রমিকদের সংগঠন।

গোল্ডেন রাইস- বিটা ক্যারোটিন এর পরিমান খুবই কম যা খুব দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়। গোল্ডেন রাইস ধান হিসেবে প্যাকেটজাত করে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রার মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে। উন্নায়নশীল দেশের দরিদ্র জনগণের মধ্যে ভিটামিন এর ঘাটতি পূরন এবং অপুষ্টি মোকাবেলায় সাহায্য করতে গোল্ডেন রাইস এর প্রচলনের যে যৌক্তিকতার কথা বলা হচ্ছে তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ ফুড এর প্রতিনিধি নাসরিন সুলতানা।

আজ (বৃহস্পতিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত কৃষি শ্রমিক কনভেনশনে তিনি কথা বলেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি আরও দাবি করেন, গোল্ডেন রাইস প্যাকেটজাতকরনে এর দাম বাড়াবে। ফলে গরিব জনগোষ্টির পক্ষে উচ্চমূল্যের এই প্যাকেটজাত গোল্ডেন রাইস ক্রয় করে খাওয়া সম্ভব হবে না।  পুষ্টিকর চালের কথা বলে গোল্ডেন রাইস চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গোল্ডেন রাইস যে নিরাপদ এই জাতীয় কোন প্রমাণ বা গবেষোনাগারের কোন পরীক্ষা-নীরিক্ষার ফল গোল্ডেন রাইসের উদ্ভাবকেরা এখন পর্যন্ত দেখাতে সক্ষম হননি। গোল্ডেন রাইসের প্রচলন মূলত বাংলাদেশের বীজের বাজার দখল কৃষকদের এই বীজ ব্যবহারে প্রলুদ্ধ করার একটা ফাঁদ।  বাংলাদেশে গোল্ডেন রাইস প্রচলন হলে কৃষি কৃষকের চরম ক্ষতি সাধিত হবে।  বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলবে। গোল্ডেন রাইসের কোন পুষ্টিকর সুবিধা নেই। গোল্ডেন রাইস হল পুরোপুরি একটি ব্যাবসায়িক কৌশল। যা কৃষকের বীজ শেষ করে ফেলবে এবং সেই জায়গায় বানিজ্যিক বীজ এর স্থান করে দিবে। কোম্পানি প্যাটেন্ট গোল্ডেন রাইস এর বাণিজ্যিক প্রচলন বাংলাদেশের সমৃদ্ধ খাদ্য বৈচিত্র এবং স্থানীয় প্রচলিত বীজ ধ্বংস করার পাশাপাশি এদেশের পুরো কৃষি ব্যাবস্থার উপর কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করবে।

আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে, বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন জাতীয় কিষাণি শ্রমিক সমিতি কর্তৃক আয়োজিত কৃষি শ্রমিক কনভেনশনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন  মুজিবুল হক মুনির, গোলাম ছরোয়ার, মোঃ মামুন হোসেন, লিলা খানম।

কোস্ট ট্রাস্টের সহকারি পরিচালক মুজিবুল হক মুনির বলেন, প্রযুক্তি আমাদের উপকারের পাশাপাশি ক্ষতিও করছে। তার একটি বড় উদাহরণ গোল্ডেন রাইস। বাংলাদেশের কৃষকদের বড় সমস্যা কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম না পাওয়া। গোল্ডেন রাইসের পিছনে এত টাকা খরচ না করে যদি এর অর্ধেক টাকা দিয়ে কৃষি পণ্যের বাজারজাত করার পেছনে দিলে কৃষকরা লাভবান হতো। এছাড়াও তিনি বলেন, সরকারকে প্রমাণ করতে হবে গোল্ডেন রাইস নিরাপদ। গোল্ডেন রাইসের অনুমোদন দেয়ার আগে সরকারকে কৃষক এবং জনগণের স্বার্থের বিষটি ভাবতে হবে।

বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন বলেন, গোল্ডেন রাইস যদি অনুমতি দেয়া হয় তবে এদেশের দরিদ্র মানুষদের ক্ষতি হবে। বাংলাদেশের বহুল প্রচলিত সবচেয়ে জনপ্রিয় বীজ বিরি ধান-২৯ কে ধ্বংশ করার জন্যই গোল্ডেন রাইসের অনুমোদন দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।