আজ ১৮ নভেম্বর ২০২৩, বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সদ্য প্রয়াত সভাপতি জনাব আব্দুল মজিদ এর স্মরণে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি শ্রমিক সমিতি, গাজীপুর কর্তৃক আয়োজিত শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। শোকসভায় বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি শ্রমিক সমিতির সভাপতি জনাব মোঃ শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ছরোয়ার ।
BAFLF is a national trade union federation in agricultural sector, set up on 30th July, 1978. Since inception, this organization initiated struggle to protect and promote the rights and interest of small and marginal farmers, farm workers and waged agricultural workers. BAFLF takes an active stand on issues that affect agriculture, rural workers, peasants and women rights. It advocates for farmers’ control on seeds and technologies, promotes food sovereignty.
Saturday, November 18, 2023
Saturday, November 11, 2023
খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্যের জন্য কৃষি সমবায়কে আন্দোলনে রূপ দিতে হবে।
অদ্য, ১১ নভেম্বর, ২০২৩ রোজ শনিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন ও জাতীয় কিষাণি শ্রমিক সমিতির উদ্যোগে ‘খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কৃষি সমবায়ের গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।জাতীয় কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল হাসান মানিক এর সভাপতিত্বে এবং আইইউএফ এশিয়া/ প্যাসিফিক ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেটর নাসরিন সুলতানা সঞ্চালনায় সেমিনারে ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ছরোয়ার। সেমিনারে বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সদ্য প্রায়ত সভাপতি আব্দুল মজিদের স্মরনে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন: সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, শ্রমিক নেতা আবুল হোসাইন, জাতীয় কিষাণি শ্রমিক সমিতির সভাপতি শারমিন সুলতানা, বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সহ সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন, নগরকান্দা কিষাণি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক লিলা খানম, শ্রমজীবী নারী সমবায় সমিতির ঝর্না বেগম, রহিমা আকতরি, আইইউএফ ফুড এন্ড বেভারেজ ওয়ার্কার্স কাউন্সিল-বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি মোঃ কামরুল হাসান প্রমূখ।
মূল প্রবন্ধে জনাব গোলাম ছরোয়ার বলেন কৃষি সমবায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উৎপাদনশীলতা, ফসলের বহুমুখীকরণ এবং সহনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যের প্রাপ্যতা, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে অবদান রাখতে পারে। সমবায় গুরুত্বপূর্ণ কৃষি উপকরণ প্রাপ্যতা ও যৌথ ক্রয়ের মাধ্যমে কম খরচে আরও অধিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। কৃষি সমবায় ক্ষুদ্র কৃষকদের আয়, যৌথ দর কষাকষির ক্ষমতা এবং বাজারের সাথে যোগসূত্র বৃদ্ধি করে খাদ্যের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে পারে এবং কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের জন্য আরও ভালো দাম নিশ্চিত করতে পারে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক পুঁজি বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করে টেকসই কৃষি ব্যবস্থা, খাদ্যের সার্বভৌমত্ব অর্জন এবং দারিদ্র্য হ্রাসে অবদান রাখতে পারে।
গোলাম ছরোয়ার আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সমবায়, বিশেষ করে কৃষি সমবায় খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের ক্ষেত্রে অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে। কারণ এই কৃষি সমবায়ের মাধ্যমে কৃষকের অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব। বিশেষ করে বাজারজাতকরণের বিদ্যমান সংকট কাটিয়ে কৃষকের জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে, কৃষকদের ঋণের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে এবং নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সমবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে খাদ্যের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার স্বার্থে এটা অন্যতম পূর্বশর্ত। জলবায়ু পরিবর্তন, ভর্তুকি হ্রাসে আন্তর্জাতিক নানামুখী চাপ, নানা কারণে অকৃষি খাতে কৃষি জমির ব্যবহার বৃদ্ধি, কৃষিতে কর্পোরেট আগ্রাসন, নির্বিচারে বিসাক্ত কিটনাশকের ব্যবহার ইত্যাদি কারণে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির সম্মূখীন। এসব হুমকি মোকাবেলায় কৃষকের জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, কার্যকর বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলা খুবই প্রয়োজন।
সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা বলেন, বর্তমানে কৃষি জমির মালিকানা শিল্পপতিদের হাতে চলে যাচ্ছে। ফলে ভ‚মিহীনের সংখ্যা বাড়ছে। ভ‚মি সংস্কার আইন কার্যকর করে সরকারকে সমবায় কৃষি প্রচার এবং প্রসারে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সংবিধানে সমবায়ের গুরুত্ব দেওয়া হলেও বাস্তবে গুরুত্বহীন করা হয়েছে। ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। যার ফলে সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার প্রবণতা ক্রমবর্ধমান। সেমিনারে উল্লেখ করা হয়, যদি কৃষি সমবায়ের সত্যিকারের বিকাশ ঘটত তাহলে মধ্যসত্তভোগীদের কারণে কৃষকরা তাদের পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হতো না এবং ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট মূল্য নিয়ন্তন করতে পারতনা। বক্তারা আরো বলেন, সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে সমবায়কে তৃণমূল পর্যায় জনপ্রিয় করে তোলার পাশাপাশি এই মুহুর্তে প্রয়োজন সমবায় নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজিকরণ করা; কৃষি খাতের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় কৃষি ভর্তুকি বাড়িয়ে কৃষি সমবায়ের মাধ্যমে কৃষকদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান; কৃষিজমি অকৃষি খাতে চলে যাওয়া বন্ধ করা এবং কৃষি খাতে আরও বেশি সরকারী বিনিয়োগ বাড়ানোর মতো সরকারি সদিচ্ছা এবং কার্যকর উদ্যোগ।